Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
দেশী শবজি
বিস্তারিত

বিস্তারিত: 

বীজ বাছাইঃ

  • রোগমুক্ত, মিশ্রণমুক্ত, পরিস্কার ও পরিপুষ্ট এবং কমপক্ষে ৮০% অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা সম্পন্ন বীজ ব্যবহার করতে হবে।
  • ১০ লিটার পরিস্কার পানিতে ৩৭৫ গ্রাম ইউরিয়া সার মিশাতে হবে। এবার ১০ কেজি বীজ ছেড়ে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দিতে হবে। পুষ্ট বীজ ডুবে নিচেজমা হবে এবং অপুষ্ট, হালকা বীজ ভেসে উঠবে। হাত অথবা চালুনি দিয়েভাসমান বীজগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। ভারি বীজ নিচ থেকে তুলে নিয়েপরিস্কার পানিতে ৩-৪ বার ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।

বীজ শোধন ও জাগ দেওয়াঃ

  • যদি বাকানী রোগ আক্রমনের আশঙ্কা থাকে তাহলে কারবেনডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
  • বীজ ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিযে রাখার পর আউশ ও আমন এর ক্ষেত্রে ৪০-৪৮ঘন্টা এবং বোরো এর ক্ষেত্রে ৬০-৭২ ঘন্টা জাগ দিলে অংকুর বের হবে।

বীজতলার জন্য স্থান নির্বাচনঃ

  • দোআঁশ ও এটেল মাটি বীজতলার জন্য ভালো। বীজতলার জমি উর্বর হওয়া প্রয়োজন।
  • বৃষ্টির পানিতে ডুবেনা এবং গাছের ছায়া পড়ে না এরুপ  জমি বীজতলার জন্য উপযুক্ত।

 বীজতলায় বীজ বপনঃ

  • জমিতে ৪-৫ টি চাষ ও মই দিয়ে থকথকে কাদাময় করতে হবে।
  • জমি তৈরির সময় পর্যাপ্ত গোবর/কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করতে হবে।
  • ১.২৫ মিটার চওড়া করে লম্বালম্বিভাবে বীজতলা তৈরি করতে হবে।
  • দুই বীজতলার মাঝে ৫০ সেমি জায়গা থেকে ১৫ সেমি গভীরতায় মাটি তুলে দুই পাশের বীজতলা সামান্য উঁচু করতে হবে।
  • এই ফাঁকা জায়গায় যে নালার সৃষ্টি হবে তা দিয়ে পানি সেচের ব্যবস্থা করা যাবে।
  • অংকুরিত বীজ প্রতি বর্গমিটার বীজতলায় ৮০-১০০ গ্রাম হিসাবে ছিটিয়েবপন করতে হবে। প্রতি ৩৩ শতক জমিতে রোপণের জন্য ৩-৪ কেজি বীজেরপ্রয়োজন।
  • এক শতাংশ বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ২০ শতাংশ জমি রোপণ করা যাবে।

বীজতলার পরিচর্যাঃ

  • বীজ বপনের পর থেকে চারার শিকড় মাটিতে লেগে যাওয়া পর্যন্ত (৪-৫দিন) নালায় সেচের পানি রাখতে হবে।
  • বপনের ৪-৫ দিন পর বীজতলায় ছিপছিপে পানি রাখা হলে চারার বাড়-বাড়তিভাল হয়। পরে চারার বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় রেখে পানির পরিমাণ ১-২ ইঞ্চিবৃদ্ধি করা যায়।
  • বীজতলায় অতিরিক্ত পানি রাখা হলে চারা লম্বা ও দুর্বল হয়।
  • চারার বৃদ্ধি কম হলে এবং গাছের পাতা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে ৭ গামে হিসাবে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
  • ইউরিয়া প্রয়োগের পরও চারা সবুজ না হলে প্রতি বর্গমিটারে ১০ গ্রাম হারে জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে।
  • পোকার আক্রমণ হলে অনুমোদিত হারে কীটনাশক দিতে হবে।

চারা তোলাঃ

  • চারা তোলার পূর্বে বীজতলায় বেশি করে পানি দিয়ে বেডের মাটি নরম করে নিতে হবে।
  • পানিতে ধুয়ে গোড়ার মাটি পরিস্কার করে নিতে হবে যাতে শিকবড় কাটা ছেঁড়া না পড়ে।
  • চারা উঠানোর সময় অক্ষ্য রাখতে হবে যেন গাছের কান্ড মুচড়ে বাভেঙ্গে না যায়। চানাটানি করে চারা      উঠালে বা আছাড় দিয়ে মাটি পরিস্কারকরলে চারার ক্ষতি হয় এবং বাড়-বাড়তি কম হয়।

 চারা রোপণের জন্য জমি তৈরিঃ

  • চারা রোপনের ২-৩ সপ্তাহ পূর্বে ৪-৫ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি থকথকে কাদাময় করতে হবে।
  • জমি একটু গভীরে চাষ করা হলে মাটিতে গাছের খাদ্য উপাদান ও পানি মজুত বেশি থাকে এবং গাছের বৃদ্ধি      ত্বরান্বিত হয়।
  • চাষের ফলে আগাছা মাটির সাথে মিশে সারের কাজ করে।
  • জমি উঁচু-নিচু থাকলে মই ও কোদাল দিয়ে সমান করে নিতে হবে।
  • শেষ চাষের সময় ইউরিয় বাদে সব সার বেসাল ডোজ হিসাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

চারার বযসঃ

  • আউশ : ২০-২৫ দিন
  • আমন  : ২৫-৩০ দিন
  • বোরো : ৪০-৪৫ দিন

চারা রোপণের নিয়মঃ

  • চারা লাইনে রোপণ করতে হবে।
  • সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫ সেমি (৮-১০ ইঞ্চি)।
  • চারা থেকে চারা ১৫-২০ সেমি (৬-৮ ইঞ্চি)।
  • প্রতি গোছাতে ২-৩টি চারা রোপণ করতে হবে।
  • হাইব্রিড ধানের ক্ষেত্রে মাত্র ১টি করে চারা রোপণ করতে হবে।
  • ২-৩ সেমি গভীরে চারা রোপণ করতে হবে।

সার ব্যবসস্থাপনাঃ

  • বেশি ফসলের জন্য মাটির উর্বরতা , ধানের জাত, জীবনকাল ও ফসলর লক্ষ্যমাত্রার উপর ভিত্তি করে সারের      মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।
  • জমি তৈরির সময় বিঘা প্রতি ৮-৯ কেজি টিএসপি, ৯-১০ কেজি এমপি, ৫-৭কেজি জিপসাম এবং ১ কেজি দস্তা      সার (জিংক সালফেট) প্রয়োগ করতে হবে।
  • মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি থাকলে অতিরিক্ত পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
  • জমিতে জমানো পানি থাকা অবস্থায় গন্ধক বা দস্তার অভাব দেখা দিলে জমির পানি বের করে দিতে হবে।

 ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগঃ

  • জমি তৈরির সময় ইউরিয়া সার প্রয়োগ না করে উপরি প্রয়োগ করা হলে ৭-১৬ ভাগ ফলন বৃদ্ধি পায়।
  • চারা রোপণের ১৫-২০ দিন  পর প্রথম কিস্তি, ৩০-৩৫ দিন পর ২য় কিস্তিএবং ৪০-৪৫ দিন পর ৩য় কিস্তি বিঘা প্রতি ১০-১২ কেজি হিসাবে (প্রতিকিস্তিতে) প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে  হবে।
  • জমিতে ছিপছিপে পানি থাকা অবস্থায় সার প্রয়োগ করে মাটির সাথেমিশিয়ে দিতে হবে এবং ২-৩ দিন পর আবার পানি দিলে সারের কার্যকারিতা ৩৩ভাগ বৃদ্ধি পায়। ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগরে পূর্বে জমি থেকে আগাছাপরিস্কার করে নিতে হবে।

 আগাছা দমনঃ

  • আগাছা আলো, পানি ও খাদ্যের জন্য ধানের সাথে প্রতিযোগিতা করে।
  • রোপণের পর ধানের জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবেঃ

আমনে : ৩০-৪০ দিনবোরোতে : ৪০-৫০ দিন

  • হাত নিড়ানি অথবা উইডা দিয়ে আগাছা দমন করা যায়। উইডার দিয়ে দুইসারির আগাছা দূর হয়। কিন্তু দুই  ‍গুছির ফাঁকে যে ঘাস থাকে তা হাত দিয়ে টেনে তুলতে হবে।
  • হাত দিয়ে আগাছা দমন করার তুলনায় উইডারের কার্যকারিতা ৪-৫ গুণ বেশি।
  • এছাড়া আগাছা নাশক প্রয়োগ করেও আগাছা দমন করা যায়।

সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনাঃ

  • রোপণের পর ১০-১২ দিন জমিতে ছিপছিপে পানি রাখতে হবে।
  • তারপর কাইচথোর এর পূর্ব পর্যন্ত AWD প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেচ দিতে হবে।
  • কাইচথোড় আসার সময় হলে জমিতে সব সময় দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে।
  • ধান পাকার ১০-১৫ দিন আগে জমি থেকে পানি বের করে দিতে হবে।

পোকামাকড় ব্যবস্থাবনাঃ

  • বীজতলায় থ্রিপস পোকার আক্রমণ দেখা দিলে বিঘা প্রতি ১৩৩ মিলিলিটার মেলাথিয়ন প্রয়োগ করতে হবে।
  • চারা রোপণের পর পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে জমিতে ডাল-পালাপুঁতে দিতে হবে, যাতে পাখি বসে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ফসল রক্ষারকাজে সহায়তা করতে পারে।
  • হাত জাল দিয়ে পোকা ধরা এবং আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা যায়।
  • ক্ষতির মাত্রা অর্থনৈতিক দ্বার প্রান্তে উপনীত হলে অনুমোদিত কীটনাশক পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করে পোকা দমন করতে হবে।
  • জমিতে জমানো পানি থাকা অবস্থায় চুঙ্গি পোকার আক্রমণ দেখা দিলে পানি সরিয়ে দিতে হবে।

রোগ ব্যবস্থাপনাঃ

  • মেঘলা আবহাওয়াতে অনেক সময় গাছের পাতা ঝলসে যায় এবং ব্লাস্ট রোগেরআক্রমণ হয়। এক্ষেত্রে হিনোসান, ব্যাভিষ্টিন ও ট্রপার প্রয়োগ করা যেতেপারে।
  • পাতা ঝলসানো রোগ এবং ব্লাস্ট রোগের তীব্রতা কমানোর জন্য বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  • ক্ষেতে রোগাক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে ফেলতে হবে।

 ধান কাটা, মাড়াই ও সংরক্ষণঃ

  • শীষের অগ্রভাগে ৮০% ধানের চাল শক্ত হলে এবং শীষের নীচের অংশে ২০%ধানের চাল আংশিক শক্ত হলে ধান পেকেছে বলে ধরে নিতে হবে। এ অবস্থায় ধানকাটা হলে ফলনের তেমন কমতি য়ে না।
  • ধান মাড়াই করার জন্য পরিস্কার জায়গা বেছে নিতে হবে। কাঁচা খলারউপর সরাসরি ধান মাড়াই না করে চাটাই বা হুগলির উপর মাড়াই করা ভাল।ধানকাটার পর মাঠে ফেলে না রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাড়াই করে ঢেলতেহবে।
  • মাড়াই করার পর ধান অন্তত ৪-৫ দিন রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে গোলা জাত করতে হবে।